ইমরানের মুক্তি চান অর্ধশতাধিক মার্কিন আইনপ্রণেতা, বাইডেনকে চিঠি
দিনাজপুর টিভি ডেস্ক
আপলোড সময় :
২৪-১০-২০২৪ ০৯:১৭:৩০ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় :
২৪-১০-২০২৪ ০৯:১৭:৩০ পূর্বাহ্ন
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক আইনপ্রণেতা।
এ লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠিও লিখেছেন তারা। চিঠিতে কারাবন্দি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের ওপর ওয়াশিংটনের প্রভাব ব্যবহার করার জন্য বাইডেনকে তারা আহ্বান জানান।
টানা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে কারাগারে বন্দি রয়েছেন ইমরান খান। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইমরান খানের মুক্তির দাবি জানিয়ে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের ৬০ জনেরও বেশি ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতা বুধবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে চিঠি লিখেছেন। এই চিঠিতে কারাবন্দি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর মুক্তি নিশ্চিত করতে পাকিস্তানের ওপর ওয়াশিংটনের প্রভাব বা শক্তি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন তারা। আইনপ্রণেতারা ওই চিঠিতে লিখেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান-সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে ঘটনা ঘটছে তা কমানোর জন্য পাকিস্তান সরকারের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট শক্তি ব্যবহার করতে আপনাকে অনুরোধ করার জন্য আমরা আজ (এই চিঠি) লিখছি।”
রয়টার্স বলছে, বাইডেনকে লেখা মার্কিন আইনপ্রণেতাদের এই চিঠিটির নেতৃত্ব দিয়েছেন মার্কিন রিপ্রেজেন্টেটিভ গ্রেগ ক্যাসার। তিনি বলেছেন, এই চিঠিটি ইমরান খানের মুক্তির জন্য মার্কিন কংগ্রেসের বহু সংখ্যক সদস্যের কাছ থেকে প্রথম সম্মিলিত আহ্বান। ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট মাস থেকে কারাগারে রয়েছেন এবং ২০২২ সালে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে অপসারণ করার পর থেকে শতাধিক মামলার মুখোমুখি হয়েছেন। মামলার কারণে ইমরান খানকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।
যদিও বিশ্বকাপজয়ী সাবেক এই তারকা ক্রিকেটার বলেছেন, তার বিরুদ্ধে এসব মামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ক্ষমতায় থাকার সময় ইমরান খান পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন এবং তার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য তাদেরই দায়ী করেছিলেন। যদিও সামরিক বাহিনী পাকিস্তানের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করার অভিযোগ অস্বীকার করে থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই ডেমোক্র্যাটিক আইনপ্রণেতারা চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। যদিও নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ অস্বীকার করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন।
ওয়াশিংটন বলছে, ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু হিসেবে চিহ্নিত করা যাবে না। এছাড়া ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতিসংঘও এই নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।ইমরান খান নির্বাচনে লড়াই করেননি, কিন্তু তার সমর্থিত প্রার্থীরা সর্বোচ্চ সংখ্যক আসন পান। তারপরও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বীরা জোট সরকার গঠন করে। জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার গোষ্ঠী গত জুলাই মাসে বলেছিল, ইমরান খানকে আটক আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় গত বছরের ৯ মে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরান খানকে। তার সেই গ্রেপ্তার পারমাণবিক অস্ত্রধারী এই দেশে মারাত্মক অস্থিরতা সৃষ্টি করে। আধাসামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের ফলে পাকিস্তানে যে অস্থিরতা শুরু হয় তা টানা চারদিন অব্যাহত ছিল এবং এতে কমপক্ষে ১০ বিক্ষোভকারীর মৃত্যু ও বহু সামরিক ও রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ধ্বংস হয়ে যায়।
এছাড়া পাকিস্তানের ইতিহাসে সেবারই প্রথমবারের মতো বিক্ষোভকারীরা ব্যারিকেড ভেঙে রাওয়ালপিন্ডিতে দেশটির সেনা সদর দপ্তরে (জিএইচকিউ) প্রবেশ করে এবং লাহোরে কর্পস কমান্ডারের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরে সামরিক বাহিনী ৯ মেকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে অভিহিত করে এবং সেনা আইনের অধীনে বিক্ষোভকারীদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়।
পরে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপে ইমরান কারাগার থেকে মুক্তি পলেও তার দল পিটিআইয়ের ওপর নেমে আসে ব্যাপক দমন-পীড়ন। সহিংসতা এবং সামরিক স্থাপনায় হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগে শত শত পিটিআই কর্মী এবং সিনিয়র নেতাদের কারাগারে বন্দি করা হয়।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dinajpur TV
কমেন্ট বক্স